বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ৩টার দিকে সুগন্ধা নদীর গাবখান ধানসিঁড়ি এলাকায় ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
শতাধিক যাত্রীকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এ পর্যন্ত ৪০ জন নিহত খবর পাওয়া গেছে। দুই শতাধিকের বেশি আহত, হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঢাকা থেকে কয়েকশ যাত্রী নিয়ে বরগুনা যাচ্ছিল এমভি অভিযান। সুগন্ধা নদীর দপদপিয়া গ্রামের কাছে এলে ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। রাত ৩টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে। যদিও পরে লঞ্চটিকে দিয়াকুল এলাকায় নদী তীরে নোঙর করা হয়।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, রাত ৩টা ২৮মিনিটে তাদের কাছে অগ্নিকাণ্ডের খবর আসে। তাদের কর্মীরা ৩টা ৫০ মিনিটে সেখানে পৌঁছে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। ট্রলার নিয়ে লঞ্চের আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন তারা কিন্তু ভোরে ঘন কুয়াশার কারণে তাদের কাজ কিছুটা ব্যাহত হয়।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার শহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই লঞ্চে ৫ শতাধিক যাত্রী ছিল বলে জানান কেবিন বয় ইয়াসিন। তিনি বলেন, ‘ওপরে থাকা বেশির ভাগ যাত্রী নদীতে লাফ দিয়েছে। যারা ঘুমিয়ে ছিল তারা সবাই মারা গেছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফিটনেসবিহীন লঞ্চটির সংস্কারহীন ইঞ্জিন স্টার্ট দিতেই লঞ্চের গোটা বডি উত্তপ্ত হয়ে ওঠতো। কিছুদিন ধরেই ভেজা কার্পেট বিছিয়ে সে তাপ থেকে রেহাই দেয়ার চেষ্টা চলে। সুগন্ধা নদীতে পৌঁছলে এবার ইঞ্জিন রুম থেকেই দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে আগুন।
ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মইনুল হক জানান, ৯৫ জনের বেশি দগ্ধ যাত্রীকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।