অনলাইন ডেস্ক:
জার্মানিতে গ্রীষ্মের ছুটির বিরতির আগে শীর্ষ রাজনীতিকদের সাক্ষাৎকারের প্রথা রয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ ও সিডিইউ দলের নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস দুটি ভিন্ন সাক্ষাৎকারে নানা বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। সেপ্টেম্বর মাসে জার্মানির পূর্বে কয়েকটি রাজ্য নির্বাচনে চরম দক্ষিণপন্থী এএফডি দলের সাফল্যের সম্ভাবনা নিয়ে তাঁরা দুজনই উদ্বিগ্ন। প্রতিবেশী দেশ ফ্রান্সে আগাম সংসদ নির্বাচনে চরম দক্ষিণপন্থী আরএন দলের জয়ের সম্ভাবনাও তাদের অস্বস্তির কারণ।
রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেনকে সামরিক ও অন্যান্য সহায়তার প্রশ্নেও তাদের ঐকমত্য রয়েছে। শোলজের মতে, জার্মানির পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ও ইউক্রেনের জন্য সহায়তাও সরকারের শরিক দলগুলোর প্রতি সমর্থন কমার অন্যতম কারণ।
অন্যান্য অনেক বিষয়ে অবশ্য চ্যান্সেলর ও বিরোধী নেতার মধ্যে মতের মিল নেই। সদ্য সমাপ্ত ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে শোলজের এসপিডি দল শোচনীয় ফল দেখিয়েছে।
তার জোট সরকারের বাকি দুই শরিক দলেরও ভরাডুবি হয়েছে। অতীতের কিছু ভুলত্রুটি মেনে নিলেও শোলজ নিজস্ব অবস্থানে অটল রয়েছেন। এমনকি ২০২৫ সালে জার্মানির সংসদ নির্বাচনে তিনি আবার চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হিসেবে ভোটারদের মুখোমুখি হতে চান। অন্যদিকে ম্যার্ৎস বর্তমান সরকারের নীতির কড়া সমালোচনা করেছেন।
পূবের রাজ্যগুলোতে এএফডি দলের উত্থান রুখতে তিনি জোট সরকারের দলের সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ভোট ‘নষ্ট না করে’ শুধু সিডিইউ দলের প্রতি সমর্থনের অনুরোধ জানিয়েছেন।
আগামী সেপ্টেম্বর মাসে স্যাক্সনি, টুরিঙ্গিয়া ও ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যের নির্বাচনে এএফডি দলের নির্বাচনী সাফল্যের সম্ভাবনার মুখে জার্মান চ্যান্সেলর ও বিরোধী নেতা মরিয়া হয়ে এমনকি সদ্য গঠিত এক দলের সঙ্গে সহযোগিতার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না। মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলোর শোচনীয় ফলাফল দেখা দিলে শোলজ ও ম্যার্ৎস ‘সারা ভাগেনক্নেশ্ট জোট’ নামের দলের সঙ্গে জোট বাঁধতেও প্রস্তুত।
উল্লেখ্য, বামপন্থী দলের এই সাবেক নেতা নিজের নামেই এক রাজনৈতিক দল গঠন করে জনমত সমীক্ষায় আপাতত বেশ এগিয়ে রয়েছেন। শোলজ ও ম্যার্ৎস এই দলের ‘পপুলিস্ট’ ও অস্পষ্ট নীতির সমালোচনা করলেও রাজ্য স্তরে সেই দলের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
করোনা থেকে শুরু করে ইউক্রেন সংকটের কারণে মানুষের মনে বেড়ে চলা অনিশ্চয়তাকে শোলজ সরকারের শরিক দলের নির্বাচনী ব্যর্থতার কারণ হিসেবে তুলে ধরেন। তবে তার মতে, কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও তার নেতৃত্বে সরকার সঠিক দিশায় অগ্রসর হচ্ছে। তবে সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিতে পারছে না প্রধান বিরোধী সিডিইউ ও সিএসইউ দল। জনমত সমীক্ষায় তাদের নেতা ফ্রিডরিস ম্যার্ৎসও শলৎসের মতোই বেশ পিছিয়ে রয়েছেন। – ডয়চে ভেলে