নিজস্ব প্রতিনিধি:
আরও তিনটি পোশাক কারখানা লিড সার্টিফাইড সবুজ কারখানার (গ্রিন ফ্যাক্টরি) তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। নতুন তিনটি কারখানাসহ বাংলাদেশে এখন সবুজ কারখানা ১৯৫টি। ফলে বিশ্বে সবুজ কারখানার তালিকায় শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। গ্রিন ফ্যাক্টরির তালিকায় বাংলাদেশের পরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া।
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
নতুন করে সবুজ কারখানার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে গাজীপুরের কোয়াট্রো ফ্যাশন লিমিটেড, ট্রাস্ট নিটওয়্যার গার্মেন্টস বিল্ডিং ও ট্রাস্ট নিটওয়্যার ওয়াশিং ও ডায়িং।
ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডিজাইন (এলইইডি) গ্রিন ফ্যাক্টরি বা সবুজ কারখানার সার্টিফিকেশন দিয়ে থাকে।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, বাংলাদেশে এখন গ্রিন ফ্যাক্টরি ১৯৫টি। এর মধ্যে প্লাটিনাম ক্যাটাগরির ৬৯টি, গোল্ড ১১২টি, সিলভার ১০টি ও সার্টিফাইড চারটি। এছাড়া ৫৫০টির বেশি কারখানা গ্রিন ফ্যাক্টরি থেকে রেজিস্ট্রেশন বা পাইপলাইনে রয়েছে।
এ ব্যাপারে বিজিএমইএ’র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, দেশে সবুজ কারখানার সংখ্যা বাড়ছে। এটি আমাদের পোশাকখাতের জন্য খুবই ইতিবাচক। ২০২২ সালে সর্বোচ্চ ৩০টি নতুন করে সবুজ কারখানার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে ২৮টি কারখানা এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। এপ্রিল মাসে আরও তিনটি কারখানা গ্রিন ফ্যাক্টরির সার্টিফিকেট পেয়েছে, যা খুবই ইতিবাচক।
সারা বিশ্বের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান পরিবেশবান্ধব স্থাপনার সনদ দিয়ে থাকে। তাদের মধ্যে একটি যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি)। তারা ‘লিড’নামে পরিবেশবান্ধব স্থাপনার সনদ দিয়ে থাকে। লিডের পূর্ণাঙ্গ রূপ হলো লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন।
সবুজ স্বীকৃতির এই সনদ পেতে একটি প্রকল্পকে ইউএসজিবিসির তত্ত্বাবধানে নির্মাণ থেকে উৎপাদন পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে সর্বোচ্চ মান রক্ষা করতে হয়। ভবন নির্মাণ শেষ হলে কিংবা পুরোনো ভবন সংস্কার করেও আবেদন করা যায়।
১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইউএসজিবিসি। সংস্থাটির অধীনে কলকারখানার পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভবন, স্কুল, হাসপাতাল, বাড়ি, বিক্রয়কেন্দ্র, প্রার্থনাকেন্দ্র ইত্যাদি পরিবেশবান্ধব স্থাপনা হিসেবে গড়ে তোলা যায়।
লিড সনদের জন্য নয়টি শর্ত পরিপালনে মোট ১১০ পয়েন্ট আছে। এর মধ্যে ৮০ পয়েন্টের ওপরে হলে ‘লিড প্লাটিনাম’, ৬০-৭৯ হলে ‘লিড গোল্ড’, ৫০-৫৯ হলে ‘লিড সিলভার এবং ৪০-৪৯ হলে ‘লিড সার্টিফায়েড’ সনদ মেলে।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে ধসে পড়েছিল নয়তলা ভবন রানা প্লাজা। এটি ছিল দেশের পোশাক শিল্পে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি। ভবন ধসে প্রাণ হারান হাজারেরও বেশি মানুষ। যারা প্রাণে বেঁচে গেছেন, তারাও পঙ্গুত্ব নিয়ে কাটাচ্ছেন মানবেতর জীবন। রানা প্লাজা ধসের পর থেকেই পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপনের বিষয়টি আলোচনায় চলে আসে।